দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- প্রাথমক নিয়োগ দুর্নীতির দায় এবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের মামলার শুনানিতে এই দাবি করেন তিনি। আদালতকে তাঁর প্রশ্ন, আমার নাম করে কেউ টাকা তুললে তার দায় আমার ওপর বর্তায় কী করে?বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে মানিক মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী এই সওয়াল করেন। তাঁর যুক্তি, নিয়োগের প্যানেল তৈরি করার পর পর্ষদ তা পাঠিয়ে দেয় জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে। তাই যদি কোথাও কোনও অনিয়ম হয়, তবে সেটি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলির মাধ্যমে হতে পারে।মানিকের আইনজীবীর বক্তব্য,হয়ত পর্ষদ যে তালিকা দিয়েছিল, সেখান থেকে সকলকে নিয়োগপত্র দেয়নি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। বদলে অন্য কাউকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ মানিকের আইনজীবীর। কেউ তাঁর মক্কেলের নাম করা, কিংবা তাঁর মক্কেলের নাম করে টাকা নিয়ে থাকতে পারে বলেও জানান তিনি। কিন্তু সেক্ষেত্রে কি মানিককে দায়ী করা যায়? প্রশ্ন প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মানিকের আইনজীবীর। মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ প্রশ্ন করেন, যদি পর্ষদ থেকে অনুমতি না দেওয়া হয়, তাহলে জেলাস্তরে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ কীভাবে নিয়োগ করবে? তখন মানিকের আইনজীবী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ যদি কোনও বেআইনি কাজ করে, তার দায় কেন পর্ষদের উপর বর্তাবে?মানিক পর্ষদ সভাপতি থাকাকালীন কত নিয়োগ হয়েছে, এবং তার মধ্য কতগুলি নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, সেটাও জানতে চান বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। জবাবে মানিকের আইনজীবী বলেন, প্রায় ৪৪ হাজার নিয়োগ হয়েছে মানিকের আমলে। সঙ্গে তিনি আরও জানান, পর্ষদের রিপোর্ট অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ৯৮ জনকে পাওয়া গিয়েছে, যাঁদের নাম পর্ষদের থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে পাঠানো হয়নি, কিন্তু তাঁরা নিয়োগপত্র পেয়েছেন। অন্যদিকে ইডির তরফের আইনজীবী আবার বলেন, মানিক ও তাঁৎ ছেলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য দিতে অস্বীকার করেছেন। এমনকী চারবার তথ্য চাওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও লাভ হয়নি বলেই দাবি ইডির। তবে বিচারপতি ইডিকে স্মরণ করিয়ে দেন, তদন্ত না এগলে অনন্তকালের জন্য কাউকে জেলে আটকে রাখা যায় না। বিকেল সাড়ে চারটেয় এই মামলার ফের শুনানি রয়েছে।