দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- স্ত্রীর অশ্লীল ছবি ভাইরাল করেন প্রতিবেশী,তারই প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন স্বামী। অভিযোগ, প্রতিবাদ জানাতে গেলে বেধড়ক মারধর করা হয় ওই মহিলার স্বামীকে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় ওই ব্যাক্তির। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত সেই প্রতিবেশী। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার ওই ঘটনায় মৃতের নাম রামশঙ্কর তিওয়ারি (৪২)। তাঁর বুকে প্রতিবেশী যুবক ঘুষি মারেন বলে অভিযোগ পরিবারের।
পরিবারের তরফে প্রথমে রামশঙ্করকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও এক হাতুড়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রামশঙ্করকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার কার্ল মার্ক্স সরণির মোহিত গলিতে। আকস্মিক ঘটনায় স্তম্ভিত রামশঙ্করের প্রতিবেশীরাও। তাঁরা জানান, রামশঙ্করের বুকে ঘুষি মারে তাঁর প্রতিবেশীর ছেলে। রামশঙ্করের মৃত্যুর খবর চাউর হতেই সে পালিয়েছে। যখন যেমন পেতেন, তেমন কাজ করতেন রামশঙ্কর। তাঁর ছেলে অনুভব জানান, তাঁর মায়ের একটি ভিডিয়ো মাস ছয়েক আগে তাঁরা দেখতে পান। অনুভবের কথায়, ‘‘না বলে শুধু ভিডিয়ো তোলাই নয়, সেটি শেয়ারও করা হচ্ছিল। এক পরিচিতের থেকে ভিডিয়োটি দেখতে পাই। মায়ের ওই ভিডিয়োটি তুলেছিল প্রতিবেশী বশিষ্ঠ সিংহের বড় ছেলে অভিষেক। তারপরে সে দেশের বাড়িতে চলে যায়। অভিষেক যে ভিডিয়োটি তুলেছিল, তা সে স্বীকার করেছে।’’
কলেজ পড়ুয়া অনুভব ছাড়া বর্তমানে বাড়িতে রয়েছেন তাঁর মা ও ছোট বোন। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন রামশঙ্কর।শুক্রবার রামশঙ্কর তাঁর ছেলেকে নিয়ে প্রতিবেশী বশিষ্ঠর বাড়িতে গিয়ে তাঁর এই কীর্তির প্রতিবাদ জানান। ভাইরাল হওয়া ছবিটি দেখিয়ে প্রশ্ন করলে প্রথমে সে অস্বীকার করে। পরে উদ্ধত হয়ে রামশঙ্করকে মারধর করতে শুরু করেন বশিষ্ঠ। রামশঙ্করের ছেলে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরের কারণে রামশঙ্করের বুক ও মাথায় চোট লাগে। অত্যন্ত অসুস্থ ও আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ওই রামশঙ্করের। হাসপাতালে পৌঁছলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে দক্ষিণ বন্দর থানায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পলাতক। তার সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।