দেবরীনা মণ্ডল সাহা,কলকাতা :- মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই গার্ডেনরিচকাণ্ডে গ্রেফতার করা হল এক প্রোমোটারকে। ধৃত প্রমোটারের নাম মহম্মদ ওয়াসিম। তাঁকে গ্রেফতার করেছে গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুন, ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টা, অবৈধ নির্মাণের জন্য কলকাতা পুরসভা আইনে মামলা করা হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে | বিপর্যয় মোকাবিলা দলের দাবি এখনও বেশ কয়েকজন আটকে রয়েছে ভিতরে। রবিবার রাতে গার্ডেনরিচে আজহার মোল্লা বাগানে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান বহুতল বাড়ির একাংশ। ভেঙে পড়ে পার্শ্ববর্তী ছোট ছোট বাড়ির উপর। ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। এই ঘটনায় প্রচুর মানুষ ওই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে। এখনও আরও বহু মানুষের ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় পৌঁছায় গার্ডেনরিচ থানা। সঙ্গে দমকল বাহিনী ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টও। উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন স্থানীয়রাও।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে সকালেই ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী | নিহতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর |এদিন মমতার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসু ও দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ”রমজান মাসে এমন একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আমরা সকলে অত্যন্ত মর্মাহত। অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকা এটা এবং বেআইনি কাজের জন্য এই ঘটনা ঘটল। উদ্ধারকাজ দ্রুত হচ্ছে।” স্বজনহারা পরিবারগুলির প্রতি শোকপ্রকাশ করলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ”এই এলাকা অত্যন্ত ঘিঞ্জি। এগুলো একদিনে তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে তৈরি হয়েছে। আমি সবটা ঘুরে দেখেছি। আমাদের পুলিশ টিম, মন্ত্রীরা সকলেই কাজ করেছে সারারাত। আমি মেয়রকে জিজ্ঞেস করছিলাম, এই বহুতল নির্মাণের অনুমতি ছিল কি না। ও জানাল, না ছিল না। বেআইনিভাবে নির্মাণ হচ্ছিল। সেই কারণেই এটা ঘটল। আশেপাশের মানুষজনের বসতির দিকে খেয়াল রাখা হয়নি। আমি অত্যন্ত দুঃখিত। শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির পাশে তো রাজ্য সরকার আছেই। কয়েকজন শুনেছি যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আমি সেখানে যাব। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করব।” তিনি আরও জানান, ”আমি বলছি, বেআইনি নির্মাণের জন্য এই ঘটনা ঘটল। যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কড়া অ্যাকশন নেওয়া হোক।”তারপর মুখ্যমন্ত্রী সোজা পৌঁছে যান নিকটবর্তী নার্সিংহোমে। এখানে চিকিৎসাধীন ৭ জন। তাঁদের দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিবারের সদস্যদেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।