প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :-সাত সকালে বাড়ির দোতলায় উঠেই চমকে যান পরিচারিকা। দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠেন রীতিমতো। ডাইনিং রুংমের চেয়ারে পড়ে বাড়ির বৃদ্ধ কর্তা, শৌচাগারে বৃদ্ধার দেহ। মনে করা হচ্ছে, যা ঘটেছে, তা সকাল ৬ টা থেকে ৮ টার মধ্যেই ঘটেছে।খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান সুজিত বসু। জানা গিয়েছে, সল্টলেকের জিসি ব্লকের বাসিন্দা যদুনাথ মিত্র ও মন্দিরা মিত্র। যদুনাথবাবু পেশায় চিকিৎসক। বয়স প্রায় ৭৮ বছর। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বৃদ্ধ দম্পতি বাড়িতে একাই থাকতেন। বুধবার সকালে হাড়হিম করা দৃশ্য। দেখা যায়, লিভিং রুমে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিলেন যদুনাথবাবু। এদিকে বাথরুমে মেলে মন্দিরাদেবী রক্তাক্ত দেহ। দেহের পাশে মেলে রক্তমাখা ছুরি। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর দেওয়া হয় থানায়। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। মহিলার দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে। হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বৃদ্ধকে। ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা তা জানার চেষ্টা চলছে।কিন্তু ঠিক কী ঘটেছিল? তা নিয়ে সন্দিহান পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, স্ত্রী মন্দিরাকে নিজেই খুন করেন বৃদ্ধ। তার পর আত্মহত্যার জন্য অ্যাসিড খেয়ে নেন বৃদ্ধ। কিন্তু ঘটনাচক্রে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। এদিন পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় হাসপাতালে। শুরু হয়েছে চিকিৎসা। তাঁকে জেরা করলে একাধিক তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করেছেন তদন্তকারীরা। তবে এর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিন সুজিত বসু জানান, ঘরের ভিতর থেকে বেশ কয়েকটি ছুরি ও একটি চিঠি উদ্ধার হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাইনিং টেবিলে পড়েছিল একটি রক্তমাখা ছুরি, টেবিলের নীচে ছিল আর একটা। আর তৃতীয় ছুরি পাওয়া যায় বৃদ্ধের পায়ের কাছ থেকে। টেবিলের ওপর ছিল সুইসাইড নোট। তাতে প্রথমে চার লাইন বাংলায় লেখা। সেখানে বৃদ্ধ লেখেন, তিনি তাঁর স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে, সুইসাইড নোটের দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে পারিবারিক বেশ কিছু কথা| দম্পতির দুই মেয়ের একজন সিঙ্গাপুর থাকেন, ছোট মেয়ে থাকেন নিউ টাউনে। পুলিশ ঘর থেকে একটি অ্যাসিডের বোতল পেয়েছে এবং বৃদ্ধের মুখে অ্যাসিডের ক্ষতও পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, স্ত্রীকে খুন করে অ্যাসিড খেয়ে নিজের ওপর ছুরি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ।