প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক হচ্ছিল। আর তখনই ফেসবুকের কমেন্ট বক্সে এক মন্ত্রী ও শাসকদলের এক নেতার বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন হাওড়ার এক যুবক। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। তবে সেই যুবককে বিকাল ৫টার মধ্যে মুক্তির নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সেই সঙ্গেই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন তিনি। গত ২৪ জুন, নবান্ন পুরসভা, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং উচ্চপদস্থ আমলাদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়ও। সেখানে হাওড়া পুরসভার পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি জমি দখল নিয়ে সোচ্চার হন। ওই বৈঠক সোশাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার হয়। সোশাল মিডিয়ায় ওই লাইভ সম্প্রচারের কমেন্ট বক্সে মন্তব্য করেন এরশাদ সুলতান নামে ওই ব্যক্তি।তিনি হাওড়ার শিবপুরের মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা। কমেন্ট বক্সের পর সোশাল মিডিয়াতেও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তিনি লেখেন, “অরূপ রায় হাওড়া পুরসভার ২৭ এবং ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুকুর বুজিয়ে ফেলেছেন।” তা নিয়ে হইচই পড়ে যায়। গত ২৮ জুন তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ৩০ জুন তাঁকে শিবপুর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপরই গ্রেপ্তার হন। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়।বিচারপতি অমৃতা সিনহা এদিন মন্তব্য করেন, ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে পুলিশ। এদিন মামলার শুনানির সময় বিচারপতির প্রশ্ন, কোনও নাগরিক ক্ষোভ জানালে, তাঁকে গ্রেফতার করা হবে? অরূপ রায় কি কোনও অভিযোগ দায়ের করেছেন? বিচারপতি সিনহার মন্তব্য, ‘দুই ব্যক্তির নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোলের ঘটনায় তৃতীয় ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করল, আর পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করল?’বিচারপতি এদিন মন্তব্য করেন, ‘অযথা নাক গলিয়েছে পুলিশ।’ আজই বিকেল পাঁচটার মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। পাশাপাশি যেদিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছিল সেদিনের অর্থাৎ, ৩০ জুন শিবপুর থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণেরও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা।