ইন্দ্রজিৎ মল্লিক :- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে হস্টেলে র্যাগিংয়ের জেরে এক পড়ুয়ার মৃৃত্যু হয়েছিল, মামলার টাকা তুলতে সেখানেই বৈঠক করল অভিযুক্তরা। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা লড়ার জন্য আইনজীবীদের যে টাকা দিতে হবে, সেটা তুলতেই ওই বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল। এমনকী হস্টেলের সুপারের নির্দেশকেও তোয়াক্কা করেনি অভিযুক্তরা। বরং বহাল তবিয়তে বৈঠক চালিয়ে যেতে থাকে। শেষপর্যন্ত ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়ের হস্তক্ষেপের পরে বৈঠক বন্ধ করা হয়। আর সেই বিষয়টি নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেই ঘটনার তুমুল নিন্দা করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমিতি (জুটা)।ফের একবার চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হোস্টেল। এক বছর আগে এখানেই যৌন হেনস্থা ও র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু হয় প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর। ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয় সেই ঘটনায়। বর্তমানে কিছু পড়ুয়া ও প্রাক্তনী জেলবন্দি। কিছুজন আবার অভিযুক্ত। এবার সেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উঠল নতুন অভিযোগ।যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে গত বছরের অগস্ট মাসে র্যাগিংয়ের জেরে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় বেশ কয়েক জন অভিযুক্ত আদালতে মামলা করেছেন। সেই মামলার খরচ চালাতে অর্থ সংগ্রহ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য মেন হস্টেলেই রবিবার রাতে বৈঠক (জিবি) ডাকেন তাঁরা। বিষয়টি জানাজানি হতেই তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এমন একটি ঘটনায় অভিযুক্তদের জন্য আবার সেই মেন হস্টেলেই কী করে বৈঠক ডাকা হল!সূত্রের খবর, বিষয়টি জানার পরেই হস্টেল সুপার বৈঠক করতে বারণ করেন। কিন্তু ওই ছাত্রেরা তাঁর কথা না শুনে বৈঠক শুরু করে দেন। এর পরে ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায় অভিযুক্ত এক ছাত্রকে ফোন করে জানান, এই বৈঠক হতে পারে না। রজত সোমবার বলেন, ‘‘আমি ফোন করার পরে মিটিং বন্ধ করা হয়।’’প্রসঙ্গত, বছর গড়িয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তেরা শাস্তি পাননি। এ দিন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানালেন, রবিবার বিষয়টি জানার পরেই ডিন অব স্টুডেন্টস এবং অ্যান্টি-র্যাগিং স্কোয়াডের প্রধানকে বিষয়টি তিনি জানিয়েছিলেন। এর পরেও এমন বৈঠক ডাকা হলে কর্তৃপক্ষ কী করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘এই সপ্তাহে ‘ন্যাক’-এর প্রতিনিধিদের আসা নিয়ে আমরা ব্যস্ত। এর পরে সকলের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় এ দিন বলেন, ‘‘খুবই দুঃখের বিষয় যে, এক জন ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় র্যাগিংয়ে যুক্তদের শাস্তি দেওয়া যাচ্ছে না। এই রকম চলতে থাকলে র্যাগিং যারা করে, তারা উৎসাহিত হবে।’’