প্রসেনজিৎ ধর :- বাংলার বন্যা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রী সরকারকেই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবারও গলায় শোনা গেল ‘ম্যান মেড বন্যা’র কথা।তিন-চার দিনের নিম্নচাপের বৃষ্টি, তার উপর ডিভিসি-র ছাড়ার ফলে প্লাবিত বহু এলাকা। একাধিক জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি। আজ, বুধবার, হুগলির বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরশুড়ায় দ্বারকেশ্বর নদীর উপর ব্রিজের অবস্থা খারাপ। এদিন ওই এলাকায় গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখে ফের ডিভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভয়াবহ পরিস্থিতি। প্ল্যান করে বাংলাকে ডোবাচ্ছে। ড্রেজিং করে না কেন্দ্র। আরও ২ লক্ষ কিউসেক জল ধরতে পারে। এত জল এর আগে কখনও ছাড়েনি। দেখছেন কেমন স্রোত জলের! ৭০ শতাংশ যখন পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে, তখন কেন জল ছাড়ে না ডিভিসি! বাংলা আর কত বঞ্চনা সহ্য করবে!এদিন মমতা বলেন, ‘‘সাড়ে তিন লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে ডিভিসি থেকে। আমি নিজে ডিভিসি-র সঙ্গে কথা বলেছি। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এত জল এর আগে ছাড়া হয়নি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যখন ৭০-৮০ শতাংশ জল ভরে যায়, তখন কেন জল ছাড়ে না ডিভিসি? কেন্দ্র ‘ড্রেনেজ’ করে না। নিজেদের রাজ্যগুলোকে বাঁচাচ্ছে। আর সবটা বাংলার উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলা আর কত বঞ্চনা সহ্য করবে?’’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে বাংলাকে ডুবিয়েছে।’’দামোদরের জলে প্লাবিত হুগলির বেশ কিছু এলাকা। পুরশুড়ার বেশ কিছু জায়গায় জলবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষজন। বেশ কিছু বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখা করে কথাবার্তা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। হুগলির তারকেশ্বরের একাধিক গ্রাম জলের তলায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক হাজার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। জলের তলায় হাজার হাজার বিঘা চাষের জমি। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির জেরে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল দামোদর। তার উপর দফায় দফায় জল ছেড়েছে ডিভিসি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। কিন্তু আবারও ডিভিসি-র ছাড়া জলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার জেরে বন্যাকবলিত তারকেশ্বর ব্লকের কেশবচক, সন্তোষপুর, তালপুর, চাপাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজার হাজার মানুষ। ইতিমধ্যে জলের তলায় চলে গিয়েছে বহু বসতবাড়ি। দুর্গতদের উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে আনার ব্যবস্থা করেছে।