প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ। ৭ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তিলজলা। নাবালিকাকে নৃশংসভাবে খুন করে নিজের রান্নাঘরে বস্তাবন্দি করে রাখে আসামি। এবার সেই ঘটনায় অভিযুক্ত অভিযুক্তর ফাঁসির নির্দেশ দিল আলিপুর পকসো আদালত। বুধবার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার বিচারক ফাঁসির নির্দেশ দিলেন। প্রসঙ্গত, সাত বছরের ওই নাবালিকাকে খুনের এই ঘটনায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল তিলজলা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও ওঠে।বৃহস্পতিবার আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালত অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে। বিচারক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের পর্যবেক্ষণ, এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা। শিশুটিকে অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছিল। তার নিজেকে বাঁচানোর মতো ক্ষমতাও ছিল না। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, খুন ছাড়াও অপরহণ, অস্বাভাবিক যৌন নির্যাতন, খুনের তথ্য-প্রমাণ লোপাটের মতো অভিযোগ করা হয়েছিল। নৃশংস সেই ঘটনার দেড় বছরের মাথায় সাজা ঘোষণা করল আলিপুরের আদালত।বাড়ির আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেছিল ৭ বছরের শিশুটি। তারপরই তোলপাড় শুরু হয়েছিল তিলজলা এলাকায়। দীর্ঘ সময় ধরে শিশুটিকে খুঁজে না পাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তাদের গাড়িতেও হামলা হয়। পরে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা এবং তিলজলা থানার পুলিশ যৌথ তদন্ত শুরু করে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার পর শিশুটির বাড়ির আশেপাশের বাড়িগুলিতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। অবশেষে উদ্ধার হয় শিশুটির দেহ। তদন্তে উঠে আসে, অভিযুক্ত শিশুটির প্রতিবেশীই। সে বাড়ির ভিতর সিলিন্ডার রাখার জায়গায় বস্তার মধ্যে শিশুটির হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখেছিল। ময়নাতদন্তে শিশুটির মাথায় অন্তত ২১টি আঘাতের চিহ্ন মেলে! পুলিশ পরে জানতে পারে, তাঁকে দুটি হাতুড়ি দিয়ে মেরে অত্যাচার করা হয়েছিল। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে শ্বাসরোধও করা হয়। ১৮ মাস পর সাজা ঘোষণা হল | অভিযুক্ত ধরার পড়ার পর তিনমাসের মধ্যে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। এই মামলায় মোট ৪৫ জন সাক্ষী ছিলেন। শুরু হয় বিচারপ্রক্রিয়া। শেষ পর্যন্ত বুধবার আলিপুরের পকসো আদালতের বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেন এবং বৃহস্পতিবার ফাঁসির সাজা শোনান।