দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- বার্ধক্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া কলকাতার এক দম্পতির সন্তান আকাঙ্খার মামলায় অনুমতি দিয়ে নতুন দিগন্ত খুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট |৫৮ বছরের নি:সন্তান দম্পতিকে টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার অনুমতি দিয়ে সাফ জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। দীর্ঘ বিবাহিত জীবনে কোনও সন্তান হয়নি। সে কারণেই টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার আর্জি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উত্তর কলকাতার দম্পতি। শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়ে দেন, আইনিভাবে আর তাঁদের কোনও বাধা থাকবে না। ৩০ বছরের বিবাহিত জীবনে সন্তান হয়নি। একপ্রকার বাধ্য হয়ে পরিকল্পনা করেন টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার। কিন্তু সেখানে বয়স সবথেকে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সে কারণেই জরুরি হয়ে পড়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি। কিন্তু সেখান থেকেও অনুমতি না পেয়ে শেষমেশ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কাশীপুরের বাসিন্দা ওই দম্পতি।গত মঙ্গলবার মামলাকারী কাশীপুরের ওই দম্পতি হাই কোর্টে ‘টেস্ট টিউব বেবি’র জন্য আবেদন করেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ৩০ বছরের বৈবাহিক জীবনে তাঁদের কোনও সন্তান হয়নি। তবে উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তান নিতে চান তাঁরা। কিন্তু স্বাস্থ্য ভবনের থেকে মিলছে না অনুমতি।‘টেস্ট টিউব বেবি’র জন্য ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ‘পিএইচএস ফার্টিলিটি ক্লিনিকে’ যান ওই দম্পতি। কিন্তু ক্লিনিকের তরফে জানানো হয়, নিয়ম অনুযায়ী স্বামীর বয়স যা থাকা প্রয়োজন, তার তুলনায় বেশি। তাই স্বাস্থ্য ভবন থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী, অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজির মাধ্যমে সন্তান নিতে চাইলে পুরুষের বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৫৫ বছর। আর মহিলাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স হবে ৫০ বছর। কিন্তু কাশীপুরের দম্পতির ক্ষেত্রে স্বামীর বয়স ৫৮। তাই স্বাস্থ্য ভবন অনুমতি দিতে নারাজ ছিল।যদিও মামলার শুনানিতে বিচারপতি সিনহা দম্পতির উদ্দেশে জানতে চান, এই বয়সে এসে সন্তানের দায়িত্ব কীভাবে তাঁরা নিতে পারবেন? উত্তরে দম্পতির আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল আর্থিকভাবে সমর্থ। সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে যা একান্ত প্রয়োজন। এ ব্যাপারে তাঁরা মানসিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়েছেন। পুরুষের বয়স বেশি হলেও এক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না।
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি হলেও আদালত কোনও নির্দেশ দেয়নি। তবে শুক্রবার বিচারপতি সিনহা জানিয়ে দিলেন তাঁদে বাবা-মা হওয়ার পথে আর কোনও বাধা রইল না।