দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- পেট ফুঁড়ে বেরিয়েছিল কাঠ, এবার সেই মৃত্যুর পথযাত্রীকেই আলো দেখালেন এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা। শল্য বিভাগের প্রধান চিকিৎসক-অধ্যাপক বিতান চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে ওই অস্ত্রোপচার। চিকিৎসকদের ওই দলে ছিলেন শিক্ষক-চিকিৎসক সব্যসাচী বক্সি, চিকিৎসক সুস্মিতা চাকি এবং অ্যানাস্থেশিয়া, সিটিভিএস ও অস্থি বিভাগের চিকিৎসকরা।হাসনাবাদের বাসিন্দা, পেশায় স্কুলগাড়ির চালক সমরজিৎ ঘোষ গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে গাড়ি মেরামত করাতে নিয়ে যান। ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে ফেরার পথে বসিরহাটের মালঞ্চ সেতুর উপরে ঘটে দুর্ঘটনা। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে মিনাখাঁ থানার পুলিশ ও ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা দেখেন, চালকের আসনে রক্তাক্ত অবস্থায় আটকে আছেন সমরজিৎ। পুলিশ জানাচ্ছে, পেট ফুঁড়ে কাঠ বেরিয়ে যাওয়ায় গাড়ি থেকে তাঁকে উদ্ধার করতে বেগ পেতে হয়। অবশেষে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে ও পরে পিজির ট্রমা কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়।হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রায় দেড় ইঞ্চি মোটা কাঠের টুকরোটির দৈর্ঘ্য ছিল পাঁচ ফুটের কাছাকাছি। যা রোগীর পেট ফুঁড়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে আসার পর ওই রোগীকে বাঁচাতে কঠিন অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। রোগী বাঁচাতে, সমরজিতের শরীরের বাইরে বেরিয়ে থাকা কাঠের অংশটি কাটা হয়। তারপর পেট থেকে কাঠের বাকি অংশ বের করেন চিকিৎসকরা। প্রবল রক্তক্ষরণ থেকে শুরু করে বিরাটাকার ওই কাঠের অভিঘাতে শরীরের অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি, সবদিকেই সতর্ক থাকতে হয় চিকিৎসকদের।হাসপাতাল সূত্রের খবর, এক দিকে কাত করে শুইয়ে সমরজিৎকে ট্রমা কেয়ারে আনার পরেই শল্য বিভাগের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। শল্য বিভাগের প্রধান চিকিৎসক বিতান চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শিক্ষক-চিকিৎসক সব্যসাচী বক্সী, সিনিয়র রেসিডেন্ট সুস্মিতা চাকী-সহ অন্যেরা এবং অ্যানাস্থেশিয়া, সিটিভিএস, অস্থি-শল্য বিভাগের চিকিৎসকদের দল প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা, ছ’ইঞ্চি চওড়া, দেড় ইঞ্চি মোটা কাঠের টুকরোটি পেট ফুঁড়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে ছিল। প্রথমে শরীরের দু’দিকে বাইরে বেরিয়ে থাকা কাঠের অংশ কাটা হয়। তার পরে পুরো পেট কেটে বাকি অংশ বার করা হয়।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal