দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- স্থগিত হয়ে গেল তিনদিনের বেসরকারি বাস ধর্মঘট। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর হস্তক্ষেপে বুধবার ধর্মঘট স্থগিত করার কথা ঘোষণা করে বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলি। আগামী ২২, ২৩ এবং ২৪ মে রাজ্যে তিন দিনের বেসরকারি বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল পরিবহণ বাঁচাও কমিটি। এই ধর্মঘটে অংশ নেওয়ার কথা ছিল পাঁচটি বাসমালিক সংগঠনের। সেগুলি হল জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট (পশ্চিমবঙ্গ), বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট, ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন,মিনিবাস অপারেটার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি, ইন্টার অ্যান্ড ইন্ট্রা রিজিয়ন বাস অ্যাসোসিয়েশন।পাঁচদফা দাবিতে চলতি মাসেই তিনদিন বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাসমালিক সংগঠন পরিবহণ বাঁচাও কমিটি। ২২, ২৩ এবং ২৪ মে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। বাসমালিকরা জানিয়েছিলেন, ১৫ বছরের পুরনো বাস এখনই বাতিল করা যাবে না। যেহেতু কোভিডের সময় দু’বছর বাস চলেনি, তাই সরকারের কাছে সেই দু’বছর বয়সসীমা বাড়াতে হবে। তাছাড়া পুলিশি জুলুম, ইচ্ছামতো টোল ট্যাক্স আদায় করা, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি-সহ নানা সমস্যা রয়েছে। এই সংক্রান্ত মোট পাঁচ দফা দাবি পূরণের আর্জি জানিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানানো হয়েছিল, আগামী ২০ মে’র মধ্যে আবেদনে সাড়া না দিলে তিনদিনের ধর্মঘটের হুমকি দেওয়া হয়। বুধবার মন্ত্রী-সহ কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা-সহ ট্রাফিক পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকেরা ফের বসেন। সেই বৈঠকে বাস মালিকদের দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখার আশ্বাসে শেষ পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত করতে সম্মত হন তাঁরা। যদিও বেসরকারি বাস মালিকদের দাবি, যদি আগামী দিনে তাঁদের দাবিদাওয়া পূরণ না হয় তারা ফের ধর্মঘটের পথে হাঁটবেন। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপাতত আমরা রাজ্য সরকারের আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিত করে দিচ্ছি। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যদি সরকারি আশ্বাসের বাস্তবায়ন না হয়, তা হলে আমরা আবার ধর্মঘট করার বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করতে বাধ্য হব।’’ধর্মঘট না হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। বৈঠক শেষে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস বলেন, ‘‘আমরা খুশি যে বাসমালিকেরা আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে ধর্মঘট করবেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁদের বেশকিছু প্রস্তাব আমাদের দিয়েছেন, আমরা সেইসব দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখে তা পূরণের চেষ্টা করব। আমরা চাই বেসরকারি বাস সচল থেকে জনজীবন স্বাভাবিক থাকুক। সমস্ত বিষয় আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা যেতেই পারে। বৈঠকে যেমন আমরা বাসমালিকদের কথা শুনেছি, তেমনই কলকাতা পুলিশের কমিশনার এবং ট্রাফিক পুলিশও তাদের কথা শুনেছে। তাই আমি মনে করি সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।’’
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal