প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- আরজি করের ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় মানবতার ললিতবাণী শুনিয়ে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া বিচারক অনির্বাণ দাসই শোনালেন ফাঁসির সাজা। ঘটনাচক্রে এবারও অভিযুক্তের নাম সঞ্জয়। চিৎপুরে এক শিক্ষক দম্পতির হত্যার ঘটনায় সঞ্জয় সেন নামে ওই খুনিকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছেন শিয়ালদা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। এই ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে উল্লেখ করে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন তিনি।২০১৫ সালের চিৎপুর থানা এলাকার জোড়া খুনের ঘটনায় এই সাজা শুনিয়েছে শিয়ালদা আদালত । এক্ষেত্রেও আসামির নাম সঞ্জয় । মঙ্গলবারই অভিযুক্ত সঞ্জয় সেনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক । এই খুনের ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলে উল্লেখ করেন সরকারি আইনজীবী । এদিন শিয়ালদা আদালতের বিচারক সরকারি আইনজীবীকে বলেন, “নিহত বৃদ্ধ দম্পতিরা দোষীকে একেবারে সন্তানের মতো স্নেহ করতেন । খুবই বিশ্বস্ত ছিল সে । তাই প্রায়শয়ই তাঁদের বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল তার । সঞ্জয়কে একসময় আর্থিক স্বাবলম্বী হতে রিকশাও কিনে দিয়েছিলেন ওই দম্পতি । তারপরেও নৃশংসভাবে সে খুন করে বৃদ্ধ দম্পতিকে । এই ঘটনায় ফাঁসির সাজা না-হলে সমাজ থেকে বিশ্বাস হারিয়ে যাবে । তাই তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন ।” একথা বলার পর সঞ্জয়কে ফাঁসির সাজা শোনান বিচারক ।জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই চিৎপুরের বাসিন্দা প্রাণগোবিন্দ দাস এবং রেণুকা দাস নিজেদের ফ্ল্যাটেই খুন হন । তাঁরা দু’জনেই অধ্যাপনা করতেন ।পেনশনভোগী বৃদ্ধ দম্পতিকে ষড়যন্ত্র করে খুন করে সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা । তারপর সে এলাকার বাইরে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল । ঘটনার পর সে পালিয়ে যায় পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে । তবে দিনকয়েক পর সেখান থেকে সে কলকাতায় চলে আসে । এরপরই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ । গোটা ঘটনার পূনর্নির্মাণ করার জন্য তাকে পুলিশ জেরা করে জানতে পারে যে, খুনে ব্যবহার করা রক্তমাখা ধারালো অস্ত্র পাশের একটি জলাশয়ে ফেলে দিয়েছিল সে । পরে সেটি উদ্ধার করা হয় । ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছিল যে, খুনের পর ঘটনাস্থল থেকে নগদ টাকা এবং গয়নাগাটি লুট করে পালায় সঞ্জয়| তদন্তে নেমে পুলিশ লুট হওয়া টাকা এবং গয়না উদ্ধার করে । এই ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা দিল শিয়ালদা আদালত ।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal