প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- দীর্ঘ তেত্রিশ বছর জেলের অন্ধকার পেরিয়ে অবশেষে খোলা আকাশের নীচে ফিরলেন সুব্রত সরকার|দীর্ঘ ৩৩ বছর কাটিয়েছে অন্ধকারে। তবে সংশোধনাগারে তার ভালো ব্যবহার মুক্তির সুযোগ করে দিয়েছে। ফিরে পিয়েছে সামাজিক জীবন। কিন্তু জীবনের প্রায় অর্ধেক সময় জেলে কাটানোর পর, কী করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন তা নিয়ে দুশ্চিতা ছিলই। এবার তার পাশে দাঁড়ালো প্রশাসন।দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন এবং প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ শুক্রবার তাঁকে হাতে তুলে দিল একেবারে নতুন অটো। রাসবিহারী থেকে বেহালা রুটে প্রতিদিন এই অটো চালিয়েই রুজির পথ খুঁজবেন সুব্রত।মাত্র ১৯ বছর বয়সে খুনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় সুব্রত সরকারের। সেই অপরাধের বোঝা বয়ে নিয়ে গত ৩৩ বছর তিনি কাটিয়েছেন জেলের অন্তরালে। লম্বা বন্দিদশার পর যখন অবশেষে মুক্তির প্রহর এল, তখন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ শুধু তাঁকে মুক্ত করেই ক্ষান্ত হয়নি, সমাজে ফেরার পথে তাঁকে স্বনির্ভর করার দায়িত্বও নিয়েছে। তাই তাঁকে দেওয়া হয়েছে এই অটোচালনার সুযোগ। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে তাকে অটো কিনতে সাহায্য করল প্রশাসন। সঙ্গে জেলা প্রশাসনের সাহায্যে বানিয়ে দেওয়া হল ভোটার, আধার-সহ অন্য প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র। অটো হাতে পেয়ে আবেগাপ্লুত সুব্রত বলেন, “আমার মত মানুষ যখন এতদিন পর সমাজে ফিরে আসবে, তখন যদি পাশে দাঁড়ায় সরকার ও প্রশাসন, তবে নতুন করে বাঁচার সাহস পাওয়া যায়। আমি চাই অন্যরাও যেন আবার অন্ধকার জীবনে না ফিরে গিয়ে স্বাভাবিক জীবনে টিকে থাকতে পারে।”প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের এক আধিকারিক জানান, শুধু শাস্তি দেওয়া নয়, বন্দিদের সংশোধন করাও তাঁদের দায়িত্ব। তাই মুক্তির পর তাঁদের পুনর্বাসনের পথ খোলা রাখা প্রয়োজন। সুব্রত সরকারের ক্ষেত্রে অটো দেওয়ার উদ্যোগ সেই প্রয়াসেরই প্রতিফলন।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal