দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- আলিপুরের নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সামনে এল নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য। মাত্র দশ দিন আগে ঘরের আলমারি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল বছর দশেকের ওই বালিকার দেহ। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল যে মেয়েটিই নিজেই নিজের জীবন শেষ করেছে৷ কিন্তু এবার খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার ঠাকুমা প্রতিমা সিংহ। উল্লেখ্য, এই নাবালিকা আবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের ভাগনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিমা সিংহ আলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানিয়েছেন যে তাঁর ছেলে ভোলা সিংহ ও পুত্রবধূ পূজা সিংহ মিলে খুন করেছে তাঁর নাতনিকে। ঠাকুমার দাবি, নাতনি তাঁকে প্রায়ই লুকিয়ে এসে বলত যে বাবা ও সৎমা মিলে তাকে নানা অজুহাতে মারধর করে। এমনকি, নাতনির তাঁর ঘরে ঢোকাও ছিল নিষিদ্ধ। পড়াশোনার অজুহাতে, কিংবা সামান্য ভুলের কারণেও, তার উপর চলত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।গত ২০ অক্টোবর কালীপুজোর রাতে সঞ্জনার দেহ উদ্ধার হয় আলিপুরের বাড়ি থেকে। আলমারির হ্যাঙ্গারে আংশিক ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় দেহটি। তদন্তে জানা যায়, সঞ্জনা হলেন আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নি। তাঁর মা ববিতা রায় ছিলেন সঞ্জয়ের দিদি। ববিতার মৃত্যুর পর স্বামী ভোলা সিংহ বিয়ে করেন ববিতারই ছোট বোন পূজাকে, যিনি কলকাতা পুলিশের কর্মী ছিলেন |এই পূজাই সঞ্জনার সৎমা। সেই পর থেকেই, ঠাকুমার অভিযোগ, শুরু হয় নৃশংস অত্যাচার। পাশাপাশি, এলাকাবাসীরাও অভিযোগ তুলেছেন, প্রায়ই সঞ্জনাকে কাঁদতে দেখা যেত, প্রতিবেশীরা মারধরের আওয়াজও শুনতেন। কিশোরীর মৃত্যুর পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে পাড়া। স্থানীয়রা ভোলা ও পূজাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান, এমনকি হাতাহাতিও হয় বলে সূত্রের খবর। তবে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পুলিশ জানিয়েছিল, দেহে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিলেছে। ভোলা ও পূজাও দাবি করেন, মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল, তাই আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ঠাকুমা প্রতিমা সিংহের নতুন এফআইআর সেই দাবি উল্টে দিয়েছে। তিনি আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, নাতনিকে খুন করা হয়েছে। ও নিজে থেকে গলায় দড়ি দিতে পারে না। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের মামলা রুজু করে গোটা ঘটনাটি ফের নতুন করে তদন্ত করা হবে।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal