প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- দিনভর টানাপোড়েন | গ্রেফতারির পর জামিন পেয়েও ফের তার উপরে স্থগিতাদেশ | রাতে সিবিআই অফিস থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে যাওয়ার সময় তাই প্রকাশ্যেই খানিকটা ভেঙে পড়লেন পরিবহণমন্ত্রী এবং কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর প্রধান ফিরহাদ হাকিম | কার্যত কেঁদে ফেলে ফিরহাদ বলেন, ‘কলকাতার মানুষকে আমি বাঁচাতে পারলাম না |’ প্রেসিডেন্সি জেলের উদ্দেশে বেরোনোর সময় প্রথমে বিচার ব্যবস্থার ওপর তাঁর আস্থার কথাও ফের জোর গলায় বলে যান তৃণমূল নেতা| ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘আইনি ব্যবস্থার ওপর আস্থা আছে| ভরসা রাখি বিচারবিভাগের মধ্যে দিয়েই আমরা ন্যায়বিচার পাব |’ পাশাপাশি সিবিআইয়ের তরফে হেনস্থার প্রসঙ্গ সামনে তিনি তাঁর সংযোজন, ‘পপুলার হওয়াটা অন্যায় নয় | আমি কী সিবিআইকে সহযোগিতা করিনি | কেন আমার জামিন থেকে বঞ্চিত হলাম?’এই কথা বলতে বলতেই গলা বুজে আসছিল তাঁর | ধরা গলাতেই আরও বললেন,“কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যই কলকাতা কর্পোরেশনের প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আমাকে নিয়োগই করা হয়েছিল | শ্মশানে যাতে মরদেহ ঠিক করে পোড়ানো হয়, ভ্যাকসিনেশন ঠিক করে হয়, টেস্টিং ঠিক করে হয়, স্যানিটাইজশন ঠিক করে হয়, সেজন্য আমাকে নিয়োগ করা হয়েছিল কলকাতার মানুষকে আমায় বাঁচাতে দিন না |” শেষে আর নিজেকে সামলাতে পারলেন না তিনি | কেঁদে ফেললেন ফিরহাদ হাকিম | জেলযাত্রার সময় বিজেপি নেতা মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ শানান মদন মিত্র | তিনি বলেন, “আমরা খারাপ শুভেন্দু আর মুকুল ভাল |”
শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সকালে ঘুমোচ্ছিলাম তখন তুলে নিয়ে এল | আমাদের আস্থা আছে | আইনি পথে চলব| আমি কোনও অন্যায় করিনি | কারও থেকে অর্থ সাহায্য নিইনি|”প্রসঙ্গত, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফিরহাদ হাকিমকেও সোমবার সকালে নারদ কাণ্ডে গ্রেফতার করে সিবিআই | সন্ধ্যায় সিবিআই স্পেশ্যাল কোর্টে চারজন জামিন পেলেও রাতে কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে৷ ফলে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয় ফিরহাদ হাকিম সহ চার জনকেই | তবে অসুস্থ বোধ করায় মঙ্গলবার সকালে মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় |