প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- মুখ্যসচিব পদে চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির এক সপ্তাহের মধ্যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে ডেকে নিয়েছে কেন্দ্র | একে কোভিড পরিস্থিতি, তার উপরে ঘূর্ণিঝড় যশের ধ্বংসলীলা | দুই দুর্যোগ সামলাতে রাজ্য যখন হিমশিম, তখনই মুখ্যসচিবের এই বদলির নির্দেশে রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় | কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপকে পুরোপুরি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতিহিংসামূলক বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি | মমতার তোপ, “আলাপন কি একজন বাঙালি আমলা বলেই এত রাগ?” প্রধানমন্ত্রীর কাজে করজোড়ে তাঁর অনুরোধ, “এই নির্দেশ প্রত্যাহার করুন | এই নোংরা খেলা খেলবেন না |ওকে কাজ করতে দিন। মানুষের জন্য কাজ করতে দিন|আমরা টিম হিসেবে কাজ করছি |” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানিয়েছেন, “১০ মে তিনি চিঠি লিখেছিলেন করোনা এবং যশে ত্রাণের জন্য, মানুষের সাহায্যের জন্য পুরনো মুখ্যসচিবকে প্রয়োজন| ২৪ মে কেন্দ্রের তরফে মুখ্যসচিবের মেয়াদ তিন মাস বাড়ানোর অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল | তারপরই কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই এভাবে চিঠি লিখেছে। এটা সংবিধান বিরোধী |রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিয়ে মুখ্যসচিবকে বদলি করেছে |” “গত ৭৪ বছরে এরকম কখনও হয়েছে?” প্রশ্ন ক্ষুব্ধ মমতার | রীতিমতো অনুনয়ের সুরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর অনুরোধ, “দয়া করে এই নোংরা খেলা খেলবেন না | আবেদন জানাচ্ছি, এই চিঠি প্রত্যাহার করুন | ওকে কাজ করতে দিন |”রীতিমতো ক্ষোভের সুরে এ দিন মমতা বলেন, “মুখ্যসচিবের কী দোষ ছিল? উনি আমার সঙ্গে কাজ করছিলেন | কিন্তু কোনও আলোচনা ছাড়াই এমন নোটিস দেওয়ার মানেটা কী? আপনাদের কোনও সৌজন্য নেই?”বাঙালি বলেই কি আলাপনকে টার্গেট করা হল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা| তাঁর কথায়,”আমরা ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত মানুষের ত্রাণ, বাসস্থান নিয়ে অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করছি। এই সময় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এটা কাজ! শুধুমাত্র একটা সরকারকে বদনাম করা হচ্ছে| বাংলার উপরে এত রাগ কেন? আলাপন বাঙালি বলে এত রাগ? আমার মুখ্যসচিব বাঙালি ও অবাঙালি থেকেছেন | আগে রাজীব সিনহা ছিলেন | আমি বাঙালি-অবাঙালি করতে চাই না | আমিও তো দিল্লি থেকে বাংলার অফিসারদের ডেকে নিতে পারি | কেন্দ্র-রাজ্য একটা তো সাংবিধানিক বোঝাপড়া থাকবে, সৌজন্য থাকবে |”