দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় ‘মৃত’ ব্যক্তি আচমকাই জীবিত হয়ে উঠলেন| শুধুই বেঁচে ওঠেননি| একই সঙ্গে তিনি এতদিন ধরে সরকারি ক্ষতিপূরণ এবং সরকারি চাকরিও ভোগ করছিলেন | কলকাতার জোড়াবাগান এলাকা থেকে ভুয়ো নথি, ডিএনএ রিপোর্ট ও ডেথ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া ওই ব্যক্তিকে আটক করল সিবিআই | সূত্রের খবর, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অমৃতাভ চৌধুরী | এমনকি আটক করা হয়েছে অভিযুক্তের বাবাকেও |জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডে মৃতদের তালিকায় নাম ছিল অমৃতাভর | সেই সময়েই মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেয় রেল | মৃতদের পরিবারের এক সদস্যকে সরকারি চাকরিও দেওয়া হয় | ডিএনএ নমুনা দেখিয়ে সেই চাকরি এবং সরকারি আর্থিক সাহায্য পেয়েছিলেন অমিতাভের বোন | সেই ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর রেলের অভ্যন্তরীণ অডিটে এই বেআইনি কার্যকলাপ ধরা পড়ে | অভিযোগ দায়ের করা হয় সিবিআই-এর দুর্নীতি দমন শাখায় | সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রাতে জোড়াবাগান থাকা এলাকায় অভিতাভ চৌধুরীর বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই | বর্তমানে তাঁদের নিজামে প্যালেসে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে|জোড়াবাগান থানা এলাকার ৫ নম্বর গঙ্গা নারায়ণ দত্ত লেনে থাকেন অমৃতাভর পরিবার | আটকের পর প্রতিবেশীরা জানান, দুর্ঘটনার পর প্রায় ৭ বছর বাড়িছাড়া ছিলেন অমৃতাভ | রাজ্য সরকারের ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করতেন | সেই চাকরিও ছেড়ে দেন | শুক্রবার রাতে সিবিআইয়ের ৮-১০ জনের একটি দল এসে অমিতাভর ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল | কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অনুমান,এর পিছনে একটি বড় চক্র কাজ করতে পারে | এই ধরনের ভুয়ো নথি জমা পড়লে সাধারণত গোড়াতেই তদন্তের সময় ধরা পড়ে | তাহলে কেন আগে এদের ধরা গেল না? তবে কি রেলের কোনও আধিকারিকও গোটা ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে? আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ | ২০১০ সালে ২৮ মে-র রাতে ঝাড়গ্রামের সর্ডিহার রাজাবাঁধ এলাকায় লাইনচ্যুত হয়ে ওই রেল দুর্ঘটনা ঘটেছিল|সেই সময়ে ডাউন লাইনে উল্টোদিক থেকে আসা একটি মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের | ঘটনায় ১৪৮ জন মারা গিয়েছিলেন বলে খবর | মৃতদের সেই তালিকাতেই ছিল অমৃতাভর নাম |