দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- অভাবের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে চরম সিদ্ধান্ত নিলেন ঢাকুরিয়ার ৩৭ নম্বর বাসের এক চালক | বাসের মধ্যেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন তিনি | মৃতের নাম রঞ্জিত দাস| বাড়ি গড়িয়ার নয়াবাদ | করোনার বিধিনিষেধ চালু হওয়া থেকেই অভাবের শিকার ‘দিন আনা দিন খাওয়া’ মানুষজন| শুরুর দিকের দিনগুলো কোনওভাবে চললেও এখন আর চালানো সম্ভব হচ্ছে না| অবশেষে একপ্রকার বাধ্য হয়ে চরম পরিণতির পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকেই | সহকর্মীদের বেশ কিছুদিন ধরেই জানিয়েছিলেন সংসারের অভাবের কথা | শেষমেষ এদিন বাসের মধ্যে থেকেই উদ্ধার হল চালকের মৃতদেহ প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান আত্মহত্যাই করেছেন ওই ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকুরিয়া-হাওড়া রুটের ৩৭ নম্বর বাসের মধ্যে এক চালকের দেহ উদ্ধার হয় | পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম রঞ্জিত দাস বয়স আনুমানিক ৪৬ বছর, গড়িয়ার বাসিন্দা| জানা গিয়েছে, অবিবাহিত রঞ্জিত ছিলেন দাদা বৌদির সংসারের আসল রোজগেরে মানুষ | মাঝে মধ্যেই সহকর্মীদের সংসারের অভাবের কথা জানাতেই ওই ব্যক্তি | ২০২১ নির্বাচনের সময় বাস নিয়েছিল কমিশন | সেই টাকাও বাকি ছিল তার | এদিন সকালে তাঁর সহকর্মীরাই প্রথম রঞ্জিতের দেহ দেখতে পান | তাঁরাই খবর দেন পুলিশে | পুলিশ দেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে | মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট না হলেও পুলিশের অনুমান ওই ব্যক্তি আত্মহত্যাই করেছেন | সহকর্মীদের দাবি, আর্থিক অনটনেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি | অন্যদিকে রঞ্জিতের পরিবারের দাবি, বুধবার রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরেননি রঞ্জিত সকালে তার সহকর্মীরাই বাড়িতে তার মৃত্যুর খবর দেয় | জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিতে বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে লাগাতর আন্দোলনে রয়েছেন বাস মালিকরা | এদিকে, কাজ না পেয়ে দুর্বিষহ অবস্থা বাস চালক ও কর্মচারীদের এই পরিস্থিতে এক বাস চালকের আত্মহত্যার ঘটনা ফের সেই চিত্রটাই তুলে ধরলো | এই ঘটনার স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা বলেন, “লকডাউন বহু মানুষের রুজিরুটি কেড়ে নিয়েছে | দিন আনা দিন খাওয়ার মানুষের পক্ষে সংসার চালানো কঠিন হয়ে উঠেছে | এই ব্যক্তির আত্মহত্যার কারণ আসলে কী, তা অনুসন্ধান করা হবে | আদৌ আত্মহত্যা না অন্য কোনও ঘটনা, তাও খতিয়ে দেখতে হবে | তবে অস্বীকারের জায়গা নেই যে দীর্ঘদিন বাস না চলায় এই পেশার মানুষদের অভাব চরমে |”