অভিষেক সাহা, মালদহ :- বিয়ের সমস্ত আয়োজন প্রায় শেষের দিকে | গায়ে হলুদ শেষ,সম্পূর্ণ হয়েছে বিয়ের আয়োজন | বাড়ি ভর্তি আত্মীয় স্বজন | গতকালই ছিল বিয়ের লগ্ন | বিয়ের তোড়জোড় চলছিল জোরকদমে | তবে অষ্টম শ্রেনীর ওই যে কন্যা নাবালিকা | সেই খবর পুলিশ ও জেলা চাইল্ড লাইনের কর্মীদের কানে পৌঁছতে তৎপর হয়ে নাবালিকার বিয়ে রুখে দেয় তারা |
গ্রেফতার করা হয়েছে পাত্রের জামাইবাবুকে | এই ঘটনা মালদহের চাঁচল থানার ভাকরি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামে | চাইল্ড লাইনের এক আধিকারিক সমীর রায় জানালেন ‘১০ ডিসেম্বর আমরা খবর পায়, চাঁচল-২ নম্বর ব্লকের ভাকরি জিপির ভবানীপুর গ্রামে দিনমজুরের ১৪ বছরের এক নাবালিকা কন্যার বিয়ে হতে যাচ্ছে | আমরা সঙ্গে সঙ্গে থানায় বিষয়টি জানিয়ে একটি জেনারেল ডায়েরি করি | সেদিনই আমরা মেয়ের বাড়িতে যাই| আমার সঙ্গে ব্লক প্রশাসনিক কর্তা এবং চাঁচল থানার পুলিশ আধিকারিকরা সেখানে ছিলেন, ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যও |মেয়ের দিদিমা বাসন্তী ঘোষের বক্তব্য,‘পাত্রী আমার নাতনি | নিমন্ত্রণ পেয়ে আমরা বিয়ের ভোজ খেতে গিয়েছিলাম | ১৪ বছরের মেয়ের কেন বিয়ে দিচ্ছিল, তা ওর বাবা-মা বলতে পারবে | শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও প্রশাসন বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে |’এদিকে এই ঘটনায় ধৃত পাত্রের জামাইবাবু ভরত ঘোষ বলেন, ‘আমি ছেলে পক্ষের লোক | আগে মেয়ের বয়স জানতাম না | বিয়েতে এসে শুনি, মেয়ের বয়স ১৪| আমার সঙ্গে যারা ছিল তারা সব চলে গিয়েছে |মেয়ের বাড়ি থেকে আমাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল বলেই আমরা চারজন এখানে এসেছিলাম | আমাকে পুলিশ তুলে নিয়ে এসেছে। বাকিরা কোথায় জানি না |’ ঘটনা প্রসঙ্গে চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইন্সটিটিউশনের শিক্ষক নীহার রঞ্জন দাস বলেন,বাল্য বিবাহ দন্ডনীয় অপরাধ | এমন ঘটনা গ্রামাঞ্চলেই বেশি ঘটে থাকে | তবে বর্তমানে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচারের মাধ্যমে বাল্য বিবাহ অনেকটা রোধ হয়েছে|