প্রসেনজিৎ ধর:-নাগাড়ে বৃষ্টি এবং একের পর এক ধসের জেরে উত্তর সিকিমে আটকে পড়েছেন বিপুল পরিমাণ পর্যটক। এক হাজারের বেশি পর্যটক এখন সেখানে আটকে আতঙ্কে রয়েছেন। বাংলার বেশি পরিমাণ পর্যটক সেখানে আটকে পড়ে নানা জায়গায় যোগাযোগ করছেন এবং ফোন করছেন। এখান থেকে বেরিয়ে এখন সকলেই নিজের বাড়িতে ফিরতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।কিন্তু আবহাওয়া প্রতিনিয়ত প্রতিকূল হয়ে উঠছে। তাই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সকলের মনে। এই পরিস্থিতিতে সিকিম সরকারের সঙ্গে উদ্ধারকাজে হাত লাগায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি আটকে রয়েছেন ১০ জন বাংলাদেশি-সহ ১৫ জন বিদেশি পর্যটক। তাঁদের উদ্ধারে আগেই সিকিম সরকারের সঙ্গে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এবার চালু করা হল হেল্পলাইন ডেস্ক। দেওয়া হল দুটি হেল্পলাইন নম্বরও। যেখানের দুটি হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।কালিম্পঙের জেলাশাসকের তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পর্যটকদের উদ্ধারের কাজে একটি হেল্পডেস্ক চালু করা হয়েছে। সাহায্যের জন্য দুজন আধিকারিকের ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। এগুলি হল- রবি বিশ্বকর্মা (৮৭৬৮০৯৫৮৮১) এবং পুষ্পজিৎ বর্মণের (৯০৫১৪৯৯০৯৬) মোবাইল নম্বর।
প্রসঙ্গত সিকিমে আটকে থাকা পর্যটকদের জন্য আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টেলিফোনে উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক আধাকারিকদের কাছ থেকে ঘটনার খবরও নেন। এবার চালু করা হল হেল্প ডেস্ক।শুক্রবার রাতেও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, তিস্তায় জলস্তর যে ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে। তিস্তার জলস্তর বিপদসীমার একেবারে কাছে রয়েছে। ফলে কালিম্পং জেলার তিস্তাবাজার-সহ তিস্তার নিম্ন অববাহিকা থেকে স্থানীয়দের সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জলস্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনিবার সকালে গজলডোবার তিস্তা ব্যারেজ থেকে প্রায় ১১০০ কিউসেক জল ছাড়া রয়েছে। ব্যারেজে ছ’টি লকগেট খোলা রাখা হয়েছে বলেও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।অন্য দিকে, উত্তর সিকিমে দুর্যোগের মেঘ এখনও কাটেনি। প্রতিনিয়ত বৃষ্টি হচ্ছে পাহাড়ি রাজ্যে। সিকিম আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে উত্তর সিকিমে প্রায় ২ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী তিন-চার দিনও বৃষ্টিপাতের একই পরিস্থিতি থাকবে বলেই জানিয়েছে সিকিম হাওয়া অফিস। এই পরিস্থিতিতে উত্তর সিকিমে বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে ছোট বড় ধস নেমেছে। আটকে বহু পর্যটক। পরিস্থিতি এমন যে, পর্যটনের জন্য বিখ্যাত লাচুংয়ের সঙ্গে গোটা রাজ্যেরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বিচ্ছিন্ন টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থাও। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বিপর্যয়ের জেরে সিকিমে এখনও ১২০০ পর্যটক আটকে রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গের।