নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা :- গণধর্ষণের শিকার হননি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক, এমনটাই খবর সিবিআই সূত্রে |এক জাতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৯ অগাস্ট কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ট্রেনি ডাক্তারের ধর্ষণ এবং মৃত্যুর ঘটনায় কেবলমাত্র সঞ্জয় রায়ই যুক্ত। যাকে ঘটনার পরদিনই গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিস। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত যা তদন্ত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, তাতে ইঙ্গিত মিলেছে যে তরুণী চিকিৎসকের (স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া) ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় একজনই জড়িত ছিল। তরুণী চিকিৎসকের উপরে অত্যাচার চালিয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্টেও সেরকম ইঙ্গিত মিলেছে। তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছিল, সেরকম কোনও প্রমাণ মেলেনি ডিএনএ রিপোর্টেও। যদিও পুরো ঘটনায় আরও অন্য কেউ জড়িত ছিল কিনা, তা নিয়ে এখনও সিবিআইয়ের তদন্ত শেষ হয়নি। আরও তদন্ত চলবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের কাছে সিবিআই ফরেন্সিক রিপোর্ট পাঠাবে |নিহত চিকিৎসক ছাত্রীর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁর সারা শরীরে অনেকগুলি ছোট-বড় ক্ষত ছিল। সব মিলিয়ে তার সংখ্যা ১৬টি। মাথায়, গালে, নাকে, ঠোঁটের ভিতরে, বাম কাঁধে ও হাতে, বাম হাঁটুতে, এবং যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। একই সঙ্গে দুই ফুসফুসে হেমারেজ অর্থাৎ রক্ত জমাট অবস্থায় পাওয়া গেছিল। বিস্তারিত রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, চিকিৎসকের এন্ডোসার্ভাইকাল ক্যানেলে গাঢ় সাদা তরল পাওয়া গিয়েছে, চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলা যেতে পারে, হোয়াইট থিক ভিসিড লিক্যুইড। কলকাতা পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে জানা গেছিল, সঞ্জয় সব অভিযোগ স্বীকার করেছে। তবে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের একটা বড় অংশই মনে করছে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। সঞ্জয় একা জড়িত নয়। নির্যাতিতার বাব-মাও এমনই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের দাবি, এটি গণধর্ষণের ঘটনা। অত্যাচার চালিয়ে ধর্ষণ করে মেয়েকে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় মেয়ের সহকর্মীরাও যুক্ত থাকতে পারে বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন মৃতার বাবা-মা। মূলত যে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে তা দেখে কেউই বিশ্বাস করতে চাইছেন না যে এটি সঞ্জয় রায় একা করেছেন। যদিও সিবিআই রিপোর্ট এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সিবিআই সঞ্জয়কে হেফাজতে পাওয়ার পর তার পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর অনুমতি চায়। যদিও আদালতের অনুমতির পরও সেই টেস্ট এখনও করাতে পারেনি তাঁরা। তবে সঞ্জয়ের মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়নে যা সামনে এসেছে, তাতেই চমকে উঠছেন তদন্তকারীরা। সঞ্জয় রায় অপরাধ করেছে কিনা তা তদন্তসাপেক্ষ, কিন্তু সে যে বিকৃত যৌনতায় আক্রান্ত অর্থাৎ ‘সেক্সুয়ালি পারভার্টেড’, তাতে কোনও সন্দেহ নেই বলেই সিবিআই সূত্রের খবর।