প্রসেনজিৎ ধর,কলকাতা :- আরজি করে জুনিয়ক চিকিৎসক তরুণীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রথম চার্জশিট দিল সিবিআই। ৫৮ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। সঞ্জয় রায়কে একমাত্র ধর্ষণ ও খুনের মামলায় একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে সিবিআই। প্রমাণ লোপাট হয়েছে সেই উল্লেখ থাকতে পারে চার্জশিটে। আরজি করের নির্যাতিতা মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর পর থেকে, বিচারের দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা। চলছে অনশন কর্মসূচি। সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মাঝে এক বার বিচারের দাবিতে সিবিআই দফতর অভিযানও করেছেন তাঁরা। ধর্মতলার অনশনমঞ্চ থেকেও জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, তাঁরা সিবিআইয়ের উপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না। এরই মধ্যে ধর্ষণ ও খুনের মামলার তদন্তে প্রথম চার্জশিট নিয়ে সোমবার আদালতের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।গত ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল ডাক্তারি ছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ। ধর্ষণ-খুনের ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা পুলিশ সিভিক পুলিশ সঞ্জয়কে গ্রেফতার করেছিল। পরে আদালতের নির্দেশে তদন্তভার গ্রহণের পর মূল মামলায় সিবিআই আর কাউকে গ্রেফতার করেনি। তবে ডাক্তারি ছাত্রীকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সঞ্জয় ছাড়াও আরও কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে আন্দোলনকারী ডাক্তারি পড়ুয়ারা এবং নির্যাতিতার পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছিল।তবে আদালত সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের দাখিল করা চার্জশিটে ৫৭ জনের বয়ানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মূল অভিযুক্ত হিসেবে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সঞ্জয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ওই সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই সঞ্জয়কে মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এটাই চূড়ান্ত চার্জশিট নয়। সেক্ষেত্রে নতুন করে কারও নাম উঠে এলে তা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে যুক্ত করা হবে।জানা যাচ্ছে, মূল খুন-ধর্ষণের মামলার চার্জশিটে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ জেলবন্দি সন্দীপ ঘোষ এব টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের নাম নেই। সিবিআই সূত্রের দাবি, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ থাকলেও মূল ধর্ষণ-খুনের ঘটনার সঙ্গে সন্দীপ বা অভিজিতের যুক্ত থাকার সরাসরি কোনও যোগ নেই। সেকারণেই আপাতত মূল মামলার চার্জশিটে তাদের নাম রাখা হয়নি। তবে সিবিআইয়ের দাখিল করা চার্জশিটের সম্পর্কে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। আন্দোলনকারীদের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার বলেন, “সিবিআই আদালতে প্রাথমিক চার্জশিট দাখিল করেছে বলে শুনেছি। আইনজীবীর সঙ্গে কথা না বলে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।”এবার এই চার্জশিটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জুনিয়র ডাক্তারদের খোঁচা দিলেন কুণাল ঘোষ। কুণাল এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, আরজি কর, যাঁরা সিবিআই চেয়েছিলেন দেখুন মূল ধর্ষণ, খুনের মামলায় তারা শুধু সঞ্জয় রায়ের নামে চার্জশিট দিল, যাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। তদন্ত চলুক। ডাক্তারদের গোষ্ঠী রাজনীতির নাটক, নানা গল্প চলবে। হয়তো পরে অন্য নাম জুড়বে। মানুন কলকাতা পুলিশ ঠিক পথেই ছিল। লিখেছেন কুণাল।