প্রসেনজিৎ ধর, হুগলি:- ২২ দিন বন্দি ছিলেন পাকিস্তানের হাতে। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর শেষ পর্যন্ত মুক্ত হন। মাসখানেক পর কয়েকদিন আগেই ফিরেছেন রিষড়ার বাড়িতে। এবার স্ত্রী নিয়ে সোজা তারকেশ্বরে পুজো দিতে চলে গেলেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ। তাঁকে দেখে জমল ভিড়। পুজো দেওয়ার জন্য পূর্ণমকে আলাদা করে সুযোগ করে দিলেন পুরোহিত। হুগলির ‘নায়ক’কে ঘিরে ফটো তোলার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তাঁকে নিয়ে সকলের সেলফি তোলার আবদার হাসুমুখে মেটান পূর্ণম।বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ তারকেশ্বর মন্দিরে যান পাকিস্থান রেঞ্জার্সের হাতে ২১ দিন বন্দি থাকা বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রজনী, মা দেবন্তী সাউ, পুত্র আরব এবং আরও দুই আত্মীয়। পুজো দিতে গিয়ে সাধারণ ভক্তদের লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময়ে মন্দিরের এক পুরোহিত ওই জওয়ানকে চিনতে পারেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ওই পুরোহিত বিএসএফ জওয়ান এবং তাঁর পরিবারকে ‘বিশেষ ভাবে’ পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। তত ক্ষণে পূর্ণমকে নিয়ে মন্দিরে উপস্থিত ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়। তিনি পুজো দিয়ে বেরনো মাত্র তাঁকে নিয়ে সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। এমনকি, পূর্ণম পুজো দিতে গিয়েছেন শুনে তাঁকে দেখার জন্য রাস্তা থেকেও অনেকে মন্দির চত্বরে চলে যান। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেন স্বেচ্ছাসেবকরা।তারকেশ্বর মন্দিরের পুরোহিত লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ওঁর মতো সৈনিক, যিনি দেশের হয়ে প্রাণ দিতে প্রস্তুত ছিলেন, আজ তাঁর হয়ে পুজো করতে পেরে আমি গর্বিত। পূর্ণম প্রথমে এসে কাউকেই পরিচয় দেননি। সকলের মতো লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি খবর পেয়ে ওঁকে গর্ভগৃহে নিয়ে যাই। ওঁরাই আমাদের রক্ষা কর্তা। ওঁদের জন্যই আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারি।’পূর্ণম বলেন, ‘পুজো দিয়ে ভালো লাগছে। মা মানত করেছিলেন, আমি ফিরলে তারকেশ্বরে পুজো দেবেন। তাই আমরা আজ এখানে এসে পুজো দিলাম। সকলে যাতে ভালো থাকে, সেই প্রার্থনাই করেছি। আমি যাতে সবর্দা দেশের হয়ে কাজ করতে পারি, বাবার কাছে সেই প্রার্থনাও জানিয়েছি।’রজনী সাউ বলেন, ‘আমি মানত করেছিলাম স্বামী ফিরলে এখানে আসব। তাই এসে পুজো দিলাম। খুব ভালো লাগছে। বাবার কৃপা ছিল এবং দেশের সমস্ত জনতা আমাদের পাশে ছিল।’
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal