প্রসেনজিৎ ধর, হুগলি :- করোনা আবহে এবছরও গড়াল না হুগলির মাহেশের রথের চাকা | রথের রশিতে টান না পড়লেও এবারে পুরো রীতিনীতি মেনেই পুজো হয় | পূর্ণ ঐতিহ্য মেনেই মাহেশের রথযাত্রা পালিত হয়ে আসছে | তবে কোভিড পরিস্থিতির কারণে এবারও মাহেশের রথের রশিতে পড়ল না টান | এবার মাসির বাড়ি যাবেন না জগন্নাথদেব | তার বদলে নারায়ণ শিলাকে নিয়ে প্রথমে পদব্রজে রথের চারপাশে ঘোরানো হয় | মন্দির চত্বরে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী মাসির বাড়ি | সেখানেই রাখা হবে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে|
সেখানেই হবে নিয়মমাফিক পুজো | মন্দিরের প্রধান সেবক সৌমেন অধিকারী জানান, ‘ঐতিহাসিক এই রথযাত্রায় রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এসেছিলেন | এই রথের প্রতিটি অংশে ইতিহাস জড়িয়ে আছে |’ প্রতি বছরই এদিন রথে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে বসানোর পর একটি বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয় | সেই পুজো দামোদর পুজো নামে খ্যাত | তিন তলা এই রথে যেখানে বলরাম, সুভদ্রা ও জগন্নাথকে বসানো হয়, সেখানে রথের নীচে একটি ছবি রাখা হয়েছে | সেখানেই সকাল থেকে পুজোর পর্ব চলছে | তবে গোটা রথকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে | এদিন বিশেষ ভোগেরও আয়োজন করা হয়েছে | বিশেষ ভোগ হিসাবে পোলাও, খিচুড়ি, আলুরদম, ধোকার ডালনা, পনির ও পায়েসের ব্যবস্থা করা হয়| প্রতি বছরই রথের দিন থেকে শুরু করে উল্টো রথ অবধি এই ধরনের বিশেষ ভোগের আয়োজন করা হয় | এদিনও ভোগের বিষয়ে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছিল | প্রসঙ্গত, পুরনো এই রথ তৈরিতে খরচ হয়েছিল ২০ হাজার টাকা | মাহেশের এই রথ পরিচিত নীলাচল নামে | প্রথম যখন রথযাত্রা শুরু হয়, তখন কাঠের রথ বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল | পরে এই রথ কাঠের বদলে লোহার করা হয়| সেই থেকে লোহার রথই এখনও পূজিত হয়ে আসছে | মাহেশের মন্দির এবং বিগ্রহ তৈরি করেছিলেন ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী | কিন্তু, রথযাত্রা উৎসব শুরু করেন শ্রীচৈতন্যর শিষ্য কমলাকর পিপলাই | যিনি পরে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত হন| পিপলাই পরিবারের উত্তরসূরীরাই রয়েছেন মন্দিরের তত্ত্বাবধানে |