দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- ছেলের মৃত্যুতে হস্টেলের আবাসিকদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা রুজু করলেন যাদবপুরের পড়ুয়া স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর বাবা রমাপ্রসাদ কুণ্ডু। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অবশ্য স্বপ্নদীপের বাবা নির্দিষ্ট করে কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেননি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করল পুলিস। স্বপ্নদীপের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ৩০২ (খুন) এবং ৩৪ (সম্মিলিত অভিসন্ধি) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস। হস্টেলের অজ্ঞাতপরিচয় আবাসিকদের বিরুদ্ধে এই মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুতে-এর শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভর্তির ২ দিনের মাথাতেই, বুধবার রাতে হস্টেলের ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে স্বপ্নদীপের। তার গায়ে কোনও পোশাক ছিল না। এই ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে মৃত ছাত্রের পরিবার। ওদিকে পুলিসের একটি দল নদিয়ার বগুলায় গিয়ে স্বপ্নদীপের ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গেও কথা বলবে। অন্যদিকে, ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রদের ইতিমধ্যেই মেইন হস্টেল থেকে শিফট করানো হয়েছে বলে জানালেন জুটার জেনারেল সেক্রেটারি পার্থপ্রতিম রায়। একইসঙ্গে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, ‘১০০ বার চিঠি লিখেছি এর আগে। কিন্তু তারপরও কোনও উত্তর মেলেনি তাঁর কাছ থেকে। এখন টুইটারে দুঃখ প্রকাশ করে কী লাভ?’ প্রশ্ন তোলেন পার্থপ্রতিম। নদিয়ার হাঁসখালি থানা এলাকার বগুলা কলেজ পাড়ায় বাড়ি স্বপ্নদীপের। বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু কো-অপারেটিভ ব্যাংকের গাজনা শাখার কর্মী। মা স্বপ্না কুণ্ডু আইসিডিএস কর্মী। দুই ছেলের মধ্যে স্বপ্নদীপ বড় ছেলে। ছোট ছেলে রত্নদীপ স্কুলে পড়ে, মাধ্যমিক দেবে। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল স্বপ্নদীপ। জয়েন্টে চান্স পেয়েছিল। কিন্তু সেদিকে যায়নি। বাংলা ভালোবাসে বলে যাদবপুরে বাংলা নিয়ে ভর্তি হয়েছিল স্বপ্নদীপ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যু ঘিরে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে। মেইন হস্টেলের বারান্দা থেকে তাঁর পড়ে যাওয়া ও মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠছে। স্বপ্নদীপের পরিবারের একাংশ ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে এই মৃত্যুর সঙ্গে র্যাগিং জড়িত কি না!তাহলে কি যাদবপুরে র্যাগিংয়ের বলি প্রথম বর্ষের ছাত্র? জয়েন্ট সিপি ক্রাইমের বক্তব্য, তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের আমরা বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে, কী হয়েছে এখনই স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। এখনও এই ঘটনায় ১০-১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ইতিমধ্যেই স্বপ্নদীপের বাবাকে ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।