প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় বড় পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের ৷ যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের কীভাবে আলাদা করা সম্ভব তা জানতে চাইল আদলত ৷ বিচারপতিদের প্রশ্ন, “কাদের অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয়েছে এবং কাদের হয়নি, কারা দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছেন এবং পাননি আদালত কীভাবে তাঁদের পৃথক করবে ? আদালতের পক্ষে এই বাছাই করা সম্ভব নয়|” বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই তদন্ত শেষ হলে তবেই নির্দিষ্ট করে জানা যাবে যে কারা এই দুর্নীতি করেছিল এবং কারা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। যারা ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছে, তারাও যে ওই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত সেটা কীভাবে প্রমাণ করা যাবে? মামলাকারীর আইনজীবী কুমারজ্যোতি তিওয়ারিকে এই প্রশ্ন করেছেন বিচারপতি চক্রবর্তী। মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, ‘এর সুবিধাভোগী‘। মামলাকারীর আইনজীবী সৌম্য মজুমদারের অভিযোগ, নিয়ম মেনে প্যানেল প্রকাশ করেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কী পদ্ধতিতে প্যানেল প্রকাশ করতে হবে তার নির্দিষ্ট কোনও বিধি রয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। পর্ষদের আইনজীবী জানান, এ ব্যাপারে বিধিতে নির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ নেই। এ কথা শুনে বিচারপতি বলেন, “তার মানে পর্ষদ নিজের পছন্দ অনুযায়ী পদ্ধতিতে প্যানেল প্রকাশ করতে পারে।“ মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, যদি প্যানেল প্রকাশের কথা বিধিতে নাও বলা হয়ে থাকে, তাহলেও প্যানেল প্রকাশ করতে হবে।বেঞ্চ আরও বলে, ” যদি প্রায় ৩৩ হাজার চাকরি বাতিল করে দিই, তাহলে যাঁরা এই নির্দেশের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাঁরা আদালতে আসেবেন ৷ তাঁদের কথাও শুনতে হবে ৷ এর শেষ কোথায় ? বছরের পর বছর তাহলে আমাদের মামলা শুনতে হবে ৷ আর তারপর যদি দেখা যায় দুর্নীতির অভিযোগ সত্যি তাহলে দুর্নীতি আশ্রয় নিয়েও একজন প্রার্থী ৭-৮ বছর ধরে চাকরি করে যাবেন !” আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ফের এই মামলার শুনানি ৷ ওই দিন মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী সৌম্য মজুমদারদকে তাঁর বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ এদিন আইনজীবী সৌম্য মজুমদার বলেন, “২০১৬ সালের প্রাথমিকে ৪২ হাজার নিয়োগ হয়েছিল ৷ নিয়ম অনুযায়ী প্যানেল প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক ৷ কিন্তু প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদ নিয়ম অনুযায়ী প্যানেল প্রকাশ করেনি ৷ পর্ষদ নিজেই জানিয়েছে, সিলেকশন কমিটি জেলাভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করেছে ৷ কিন্তু সেই প্যানেল সংরক্ষণের নিয়ম মেনে করা হয়নি ৷ কারণ, সংরক্ষিত প্রার্থীদের জন্য আলাদা প্যানেল প্রকাশ করার কথা ৷”আইনজীবীর এই বক্তব্যের সূত্র ধরে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ আদালতের কী করা উচিত, তা জানতে চেয়েছেন ৷ আগামী শুনানিতে আইনজীবীরা তা জানাবেন ৷
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal